আলোক সক্রিয়তার ব্যাখা

একাদশ- দ্বাদশ শ্রেণি - রসায়ন - রসায়ন - দ্বিতীয় পত্র | | NCTB BOOK

আলোক সক্রিয়তা কী?

আলোক সক্রিয়তা (Optical Activity) একটি পদার্থের বৈশিষ্ট্য, যার মাধ্যমে এটি সমতল পোলারাইজড আলোকে একটি নির্দিষ্ট কোণে ঘুরিয়ে দিতে সক্ষম হয়। এই বৈশিষ্ট্যবিশিষ্ট পদার্থগুলিকে বলা হয় আলোক সক্রিয় পদার্থ।


আলোক সক্রিয় পদার্থের বৈশিষ্ট্য

  1. চিরাল কেন্দ্র (Chiral Center):
    একটি কার্বন পরমাণুর সাথে চারটি ভিন্ন পরমাণু বা গ্রুপ যুক্ত থাকলে, সেই কার্বন পরমাণুকে চিরাল কেন্দ্র বলা হয়।
  2. অপ্রতিসাম্য (Asymmetry):
    আলোক সক্রিয় পদার্থের অণুগুলোর গঠন অপ্রতিসাম্যপূর্ণ হয়, যার কারণে এগুলো আয়ন (Mirror Image) হয়েও একে অপরের উপর সুপারইম্পোজেবল নয়।

পোলারাইজড আলো এবং ঘূর্ণন

সমতল পোলারাইজড আলো যখন আলোক সক্রিয় পদার্থের মধ্যে দিয়ে প্রবাহিত হয়, তখন এটি একটি নির্দিষ্ট কোণে ঘুরে যায়। এই কোণটিকে ঘূর্ণন কোণ (Angle of Rotation) বলা হয়।

  1. ডেক্সট্রোটেটরি (Dextrorotatory):
    যদি আলো ডান দিকে (ঘড়ির কাঁটার দিকে) ঘুরে যায়, তবে পদার্থটিকে ডেক্সট্রোটেটরি বলা হয়।
  2. লেভোরোটেটরি (Levorotatory):
    যদি আলো বাম দিকে (ঘড়ির কাঁটার বিপরীত দিকে) ঘুরে যায়, তবে পদার্থটিকে লেভোরোটেটরি বলা হয়।

আলোক সক্রিয়তার ব্যবহার

  1. রাসায়নিক গঠন নির্ধারণে:
    চিরাল যৌগগুলোর গঠন বোঝার জন্য আলোক সক্রিয়তা গুরুত্বপূর্ণ।
  2. ঔষধ শিল্পে:
    অনেক ওষুধের কার্যক্ষমতা তাদের আলোক সক্রিয় বৈশিষ্ট্যের উপর নির্ভরশীল।
  3. জৈব রসায়নে:
    বিভিন্ন জৈব যৌগের সনাক্তকরণ এবং বিশ্লেষণে ব্যবহৃত হয়।

সারাংশ

আলোক সক্রিয়তা একটি বিশেষ বৈশিষ্ট্য, যা রাসায়নিক এবং জৈবিক প্রক্রিয়াগুলিতে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করে। এটি পোলারাইজড আলোর ঘূর্ণনের মাধ্যমে পদার্থের চিরাল প্রকৃতি সনাক্ত করতে সাহায্য করে।

Content added By
Promotion